শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:২৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ফরিদগঞ্জে বাজার মনিটর করেছে বিশেষ টাস্কফোর্স ফরিদগঞ্জে মাদক বিক্রি ও সেবনে বাধা দেওয়ায় কুপিয়ে আহত ফরিদগঞ্জে মুক্তিযোদ্ধা হাসান রাজা পাটওয়ারীর দাফন সম্পন্ন বয়স বাড়িয়ে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা, বয়স কমিয়ে রাজউকে চাকরি ঝুলে আছে খেলাপি ঋণের ২০ হাজার মামলা গণপিটুনিতে নিহত চেয়ারম্যান সেলিম খানের সেই অস্ত্র উদ্ধার রামদাসেরবাগ তা’লীমুল কোরআন নূরানী মাদ্রাসার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ ও পুরস্কার বিতরণ অনুপ্রবেশকারীদের বিএনপির কোন কমিটিতেই স্থান হবেনা : উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল খালেক পাটওয়ারী রূপসা উত্তর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড বিএনপির দ্বি- বার্ষিক সম্মেলন সম্পন্ন বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থ রক্ষাই বর্তমান সরকারের অগ্রাধিকার: নৌপরিবহন উপদেষ্টা

বাঘায় গুড় তৈরীর কারখানায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র‌্যাবের অভিযান

Reporter Name / ১৬ Time View
Update : বুধবার, ৮ জুলাই, ২০১৫

বাঘা সংবাদদাতা: রাজশাহী: রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী এলাকায় ভেজাল গুড় তৈরীর কারখানায় নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেটসহ র‌্যাব-৫ বিশেষ অভিযান চালিয়েছেন। অভিযানে ছয়টি কারখানায় চার লক্ষ ৫৯ হাজার টাকা জরিমানা করে ভেজার গুড়সহ তৈরীর উপকরন ধ্বংস করা হয়েছে। তবে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন উপজেলার পাঁচপাড়া গ্রামের মোস্তফা হোসেন নামের এক ব্যবসায়ীর তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদ- প্রদান করেন। এ ছাড়া প্রায় দুই লক্ষ ৬৭ হাজার ৭২০ টাকার মূল্যের তিনহাজার ১৪০ কেজি গুড় ধ্বংস করা হয়েছে।
জানা যায়, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিলুফা ইয়াসমিন ও র‌্যাব-৫ এর এসএসপি রেজিনুরের নেতৃত্বে গতকাল মঙ্গলবার দিনব্যাপী উপজেলার আড়ানী বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন রুবিনা বেগমের ২৫ হাজার টাকা জরিমানা, ৪৮ হাজার টাকার চিনি নিলামে বিক্রি ও ২৮ হাজার ৩৫০ টাকা মূল্যের গুড় ধ্বংস করা হয়েছে। মহিলা কলেজ সংলগ্ন মহনের ৭০ হাজার টাকা জরিমানা, ২২ হাজার ২৫০ টাকা মূল্যের গুড় ধ্বংস করা হয়েছে। চকরপাড়া গ্রামের শফিকুলের এক লক্ষ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা, দুই লক্ষ ৮৬ হাজার ৫২০ টাকা মূল্যের গুড় ধ্বংস করা হয়েছে। কৈবত্তপাড়া গ্রামের আসমত আলীর ৬০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬৯ হাজার ২৮০ টাকা মূল্যের গুড় ধ্বংস করা হয়েছে। পাঁচপাড়া গ্রামের এ্যানি বেগমের ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, ৬৩ হাজার ৮৪০ টাকা মূল্যের গুড় ধ্বংস করা হয়েছে। এ ছাড়া একই গ্রামের মোস্তফা হোসেনের ৫৫ হাজার ৪৮০ টাকা মূল্যের গুড় ধবংশ করা হয়েছে। তিনি দ্বিতীয়বার ভেজাল গুড় তৈরি করার অপরাধে তাকে তিন মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ডসহ ২০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরো এক মাসের কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
ভেজার গুড়সহ তৈরীর উপকরন উদ্ধার করে ধ্বংস করা হয়েছে। তবে তাদের দুই মাস থেকে চার মাসের জেল অনাদায়ে চার লক্ষ ১৩ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তারা সুমুদয় টাকা জরিমানা দেয়ায় জেল থেকে মুক্তি পেয়েছে বলে জানা গেছে। উল্লেখ্য মৌসুমের শেষ সময়েও অবাধে অসাধু ব্যবসায়ী অধিক মুনাফা লাভের আশায় চিনি, চুন, ফিটকিরি, হাইড্রোজ ও কেমিক্যাল মিশিয়ে ভেজাল গুড় তৈরি করে উপজেলার হাট-বাজারে বিক্রি করছে। সেই সাথে গুড়ের রঙ উজ্জ্বল করতে মেশানো হচ্ছে বিষাক্ত কেমিক্যাল।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভেজাল উপকরন দিয়ে এক কেজি গুড় তৈরি করতে খরচ হেেচ্ছ ২০ থেকে ২২ টাকা। পক্ষান্তরে এক কোজি গুড়ের দাম ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। সে কারণে ওই সকল ব্যবসায়ীরা অধিক মুনাফা লাভের আশায় ভেজাল উপকরন মিশিয়ে গুড় তৈরি করেন। এসব ভেজাল গুড় কিনে ক্রেতারা প্রতিনিয়ত প্রতারিত হচ্ছেন। দিন দিন গুড়ের প্রকৃত মান কমে যাচ্ছে। একশ্রেণির অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীরা এ কাজে জড়িত। এ ব্যাপারে ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, যেসব ব্যাপারি বা ব্যবসায়ী গুড় ক্রয় করেন, তাদের পরামর্শ ও উৎসাহে তারা গুড়ে ভেজাল মেশান। সাম্প্রতিক সময়ে গুড়ে ভেজাল সামগ্রী মেশানোর ঘটনা আরো বেড়েছে। তারা জানান, দাম বেশি পাওয়ার আশায় গুড়ে ওই সকল উপকরন মেশানো হচ্ছে। কারণ গুড়ের চেয়ে ওই সকল উপকরেনর দাম কম। ফলে লোভ সামলাতে না পেরে গুড় তৈরির সাথে সম্পৃক্ত একশ্রেণির ব্যবসায়ীরা গুড়ে ভেজাল দিচ্ছেন। ব্যাপারিরা যে ধরনের গুড় পছন্দ করেন, সে দিক খেয়াল রেখেই গুড় তৈরি করেন সংশ্লিষ্টরা। গুড় তৈরিতে তাদের কিছু পরামর্শও থাকে। বাইরের ক্রেতাদের আকৃষ্ট করতে ও ভালো দাম পেতে ব্যাপারিদের পরামর্শে গুড়ে ভেজাল মেশানো হয়ে থাকে বলে স্থানীয় সূত্র জানিয়েছেন। আড়ানীর একজন গুড় ব্যবসায়ী ও উৎপাদনকারী ভেজাল মেশানোর সত্যতা স্বীকার করে জানান, গুড়ে চিনি মেশালে রঙ ও স্বাদের কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না। এর সাথে যোগ হচ্ছে চুন, ফিটকারি ও হাইড্রোজ। একই এলাকার অপর একজন গুড় ব্যবসায়ী জানান, বর্তমানে দ্রব্যমূলের বাজারে এক কেজি গুড় বিক্রি করে যদি এক কেজি মাছ কেনা না যায়, তা হলে সরকারের উচিত মাছ-গোশতসহ বিভিন্ন রকম তরিতরকারির দাম কমানো। তা হলে যাঁরা এভাবে গুড় তৈরি করছেন, তারা আগামীতে আর করবেন না।
সিভিল সার্জন ডাক্তার আবদুস সুহান জানান, গুড়ের মান ঠিক রাখতে হলে কর্তৃপীয় তদারকি ও সচেতনতার বিকল্প নেই। এটি করা সম্ভব হলে গুড়ে ভেজাল মেশানো বন্ধ হতে পারে। তবে ভেজাল গুল খেলে ক্যানসার, কিডনি ড্যামেজ হয়ে যায়। এ ছাড়া ভেজাল গুড় মানবদেহের জন্য ব্যাপক ক্ষতি করে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category