বিচারপতি নাঈমা হায়দার ও বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলামের হাই কোর্ট বেঞ্চ মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়া দুই প্রার্থীর এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে সোমবার এ রুল দেয়।
৩৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা কেন পুনরায় নেওয়া হবে না- রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে বলে রিটকারীদের আইনজীবী নূর উস সাদিক জানিয়েছেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, সরকারি কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান, সদস্য, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সচিব ও শিক্ষা সচিব, জনপ্রশাসন সচিব, অর্থ সচিব ও আইন সচিবকে চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
৩৪তম বিসিএসের লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার পর উত্তীর্ণদের মধ্য থেকে নিয়োগের জন্য বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি) গত অগাস্টে তালিকা প্রকাশ করে, যাতে ক্যাডার পদে দুই হাজার ১৫৯ জনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। পরে তালিকায় যোগ করা হয় আরও ১৭ জনের নাম।
এক্ষেত্রে যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করা হয়নি অভিযোগ এনে প্রকাশিত ফলের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে গত সপ্তাহে উচ্চ আদালতে ওই রিট করেন চৌধুরী মো. জাফর শরীফ নামের একজনসহ মৌখিক পরীক্ষায় বাদ পড়া দুই প্রার্থী।
আদালতে রিটকারীদের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. নূর উস সাদিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ফরিদা ইয়াসমিন ও সামিরা তারাননুম রাবেয়া।
রিটের পক্ষে যুক্তি দিয়ে আইনজীবী সাদিক বলেন, “নন ক্যাডার নিয়োগ বিশেষ বিধিমালা-২০১০ এর ৫ (১) অনুসারে মেধাক্রমের ভিত্তিতে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করতে হবে। কিন্তু এবার পিএসসি তা না করে রোল নম্বর অনুসারে ফল প্রকাশ করে।
“এছাড়া ক্যাডার পদে মেধা ও কোটার ভিত্তিতে আলাদাভাবে ফল প্রকাশের প্রথা চালু থাকলেও এবার তা করা হয়নি।”
তিনি বলেন, “ফলাফলে ক্যাডার পদে যাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়েছে, তাদের মধ্যে প্রতিবন্ধীদের জন্য এক শতাংশ কোটা থাকার কথা।
“এই এক শতাংশ সংখ্যা হিসাবে ২১ জন হলেও প্রতিবন্ধী কোটায় মাত্র তিনজনকে নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এছাড়া ৪০৪টি পদ শূন্য রাখা হয়েছে।”
বিভিন্ন ক্যাডারে দুই হাজার ৫২টি পদে নিয়োগ দিতে ৩৪তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল পিএসসি।
কোটা নিয়ে জটিলতার কারণে এ বিসিএসের প্রিলিমিনারির ফল দেওয়া হয় দুই দফায়।
২০১৩ সালের ৮ জুলাই কোটার ভিত্তিতে প্রথম প্রকাশিত ফলাফলে ১২ হাজার ৩৩ জন উত্তীর্ণ হন।
এতে মেধাবী অনেকেই বাদ পড়েন অভিযোগ তুলে চাকরিপ্রার্থীদের আন্দোলনের মুখে ওই বছরের ১৪ জুলাই ৩৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারির পুনর্মূল্যায়িত ফল দেওয়া হয়, যাতে রেকর্ড সংখ্যক ৪৬ হাজার ২৫০ জন উত্তীর্ণ হন।
লিখিত পরীক্ষায় নয় হাজার ৮২২ জন উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। তাদের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয় ২৯ অগাস্ট।