জিটিবি নিউজ ডেস্ক : “স্যার সব কিছু জানি, তারপরও অভাবের কারণে ভারত যাচ্ছি। মোরেলগঞ্জ উপজেলার চন্ডিপুর গ্রামের হেলাল শেখের সাথে বিয়ে হয় ২০১১ সালে। অভাবের কারণে স্বামী দালালের মাধ্যমে ইন্ডিয়ায় গিয়ে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে জেলে গিয়েছিল। পরে ৬০ হাজার টাকা খরচ করে বের হয়েছে। এই ৬০ হাজার টাকা দেনার জন্য সে দেশে আসতে পারছে না। সে বলেছে ভারতে দু‘জনে মিলে কাজ করে দেনার টাকা শোধ করে এক সাথে দেশে ফিরে আসবে।” এক পুলিশ সদস্যের প্রশ্নের উত্তরে এ কথাগুলে বলছিল ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে নিয়ে যাওয়ার সময় উদ্ধার হওয়া মোরেলগঞ্জ উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের হাসেম শেখের মেয়ে মাধুরী বেগম ( ২০)। সে দুই বছরের ছেলে রিফাতকেও এদেশে রেখে ভারতে পাড়ি জমাচ্ছিল দালালের সাথে।
গতকাল শুক্রবার সকালে বাগেরহাট-পিরোজপুর মহাসড়কের বাগেরহাট সদর উপজেলার দড়াটানা ব্রীজের টোলপ্লাজা এলাকা থেকে নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৮ জনকে উদ্ধার করেছে বাগেরহাট মডেল থানা পুলিশ। এ সময় আটক করা হয় মো. আব্বাস হাওলাদার (৩৫) নামের এক পাচারকারীকে। আটক পাচারকারী আব্বাস মোরেলগঞ্জ উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের চালিতাবুনিয়া গ্রামের মৃত দলিল উদ্দিনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, ভালো চাকরি ও উপার্জনের প্রলোভন দিয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ১৮ জনকে ভারতে পাচারের উদেশ্যে একত্র করা হয়। এ দিন সকালে একটি ভাড়া করা ট্রাকে করে পাচারকারী চক্রের মূল হোতা আব্বাস হাওলাদার মোরেলগঞ্জ থেকে সাতক্ষীরা যাবার পথে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বাগেরহাট শহরের দড়াটানা টোলপ্লাজা থেকে মডেল থানা পুলিশ তাদের উদ্ধার করে।
উদ্ধারকৃতরা হলেন, মো. আবুল খায়ের (৩২), শাহাদাত (২৫), হারুন শেখ (৪০), আলম (৪৫), কাঞ্চন মৃধা (৩৭), ফিরোজ গাজী (৩২), রোকেয়া বেগম ৩৬), মাধুরী বেগম (১৮), হাসিনা বেগম (২০), লাকি আক্তার (৪০), লাভলি (২১), রশিদা (৩২), তাসলিমা (৪০), আসলাম (৭), সুরাইয়া (৪), আবদুর রহিম (৬), রবিউল (৭), মো. আমিন (১১)।
উদ্ধারকৃতরা জানান, তারা কাজের সন্ধানে ভারতের ব্যাঙ্গালোর শহরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন। উদ্ধার হওয়া কয়েক জনের নিকট আত্মীয় দীর্ঘদিন ধরে সে দেশে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে বলেও জানান তারা।
বাগেরহাটের সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. জাহিদুর রহমান জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শুক্রবার সকালে বাগেরহাট শহরের দড়াটনা টোলপ্লাজা এলাকা থেকে বাগেরহাট সদর থানার ওসি মো. তোজাম্মেল হক এক পাচারকারীকে আটক ও নারী-পুরুষ ও শিশুসহ ১৮ জনকে উদ্ধার করে। উদ্ধারকৃতদের মধ্যে ৬ জন পুরুষ, প্রতিবন্ধিসহ ৫ শিশু ও ৭ নারী রয়েছেন। তাদের বাড়ি বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে।
তিনি আরো জানান, পুলিশের হাতে আটক মানব পাচারকারী চক্রের হোতা আব্বাস হাওলাদার স্বীকার করেছে এর আগেও সে ৫/৬ বার ভালো চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে বেশ কয়েক জনকে ভারতে পাচার করেছে। এবারও সে মোরেলগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম থেকে ওই ১৮ জনকে ভারতে ভালো চাকুরীর প্রলোভন দিয়ে একত্র করে। সামান্য খরচে ভালো চাকুরীর সুযোগের প্রত্যাশায় গ্রামের সহজ সরল মানুষ আব্বাসকে বিশ্বাস করে ভারতে যাবার জন্য আগ্রহ দেখায়। এ অবস্থায় গতকাল শুক্রবার ভোরেই একটি ট্রাকে করে তাদের কে মোরেলগঞ্জ থেকে সাতক্ষীরায় সিমান্ত দিয়ে ভারতে পাচারের উদ্দেশ্যে আব্বাস ট্রাক ভাড়া করে। ভারতে যাতায়াত খরচ বাবদ জন প্রতি প্রত্যেকের নিকট থেকে সে ৫ হাজার টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করেছে। উদ্ধারকৃত ১৮ জনের মধ্যে একটি পরিবারও রয়েছে বলে তিনি জানান। আটক পাচারকারী চক্রের হোতা মো. আব্বাসকে বাগেরহাট মডেল থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে
এখানে কি লেখা হবে?
প্রধান উপদেষ্টা: ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা: এ্যাড: একেএম ফজলুল করিম, সম্পাদক: অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বিজয়, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুর রউফ তালুকদার, সহকারী সম্পাদক: অসীম কুমার সরকার, বার্তা সম্পাদক: হুমায়ূন কবির
প্রধান কার্যালয়: কালিয়াকৈর, গাজীপুর। শাখা অফিস: কটাপুর, বগুড়া। 01710 782253
Copyright©dainikbangladeshsomoy.com All rights reserved