চীনের একটি প্রতিষ্ঠানে মশা উৎপাদন করা হচ্ছে । মশা বিরক্তিকর আর বিপদজনক। ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়ার মতো রোগের কারণ মশা। কিন্তু কোনো প্রতিষ্ঠান মশা উৎপাদন করছে এ কথা শুনলে আশ্চর্য লাগারই কথা। কিন্তু এমন ঘটনাই ঘটেছে চীনে। দেশটির গোয়ানডং রাজ্যের এক কারখানার আধুনিক প্রযুক্তি সুবিধার পরীক্ষাগারে প্রতি সপ্তাহে লাখো মশা উৎপাদন করা হচ্ছে আবার পরে তা ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে বাইরের পরিবেশে। ভাবছেন এ আবার কোন আজব প্রতিষ্ঠান, আর কেনইবা এই মশা উৎপাদন? আনন্দের বিষয় হচ্ছে— এ কারখানায় উৎপন্ন পুরুষজাতীয় মশারা কাউকে কামড়ায় না, শুধু ফল-ফুল থেকে মধু খায় আর ডেঙ্গু মশা নির্বংশের কাজ করে।
কিন্তু চীনে হঠাৎ করে এই মশা উৎপাদনের পরীক্ষাগার তৈরি হলো কেনো? গবেষকেরা বলছেন, গত বছরে চীনে ডেঙ্গুর ব্যাপক প্রকোপ দেখা দেয় যাতে অনেক লোক মারা গিয়েছিল। ডেঙ্গুর আক্রমণ ঠেকাতে বিশেষভাবে জীবাণুমুক্ত ও অনুৎপাদনশীল এই মশা উৎপাদনের সিদ্ধান্ত নেয় দেশটি। গুয়াংজু সায়েন্স সিটিতে তৈরি করা হয় মশা উৎপাদনের জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় পরীক্ষাগারটি। চীনের পিপলস ডেইলি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিশেষভাবে জন্মানো এই মশা দিয়ে ডেঙ্গু মশাকে নির্বংশ করা সম্ভব। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুয়াংজু পরীক্ষাগারে যে লাখো মশা জন্মানো হচ্ছে তা সপ্তাহান্তে সাজি আইল্যান্ডে উন্মুক্ত করে দেওয়া হচ্ছে। প্রকল্প পরিচালক জি ঝিংওং এর নেতৃত্ব দেন
গবেষকেরা বলছেন, এ মশা উন্মুক্ত করার ফলে ডেঙ্গুর প্রকোপ কমবে কারণ ল্যাবে উৎপন্ন মশাগুলো ডেঙ্গুর জন্মনিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম। এদের কারণে ডেঙ্গুর ডিম আর ফুটবে না।
গবেষকেরা বলছেন, তাঁদের পরীক্ষাগার থেকে যে পুরুষ মশা ছাড়া হয় তাতে কোনো ক্ষতির আশঙ্কা নেই, এমনকি এগুলো কামড়ায়ও না। পরীক্ষা করে এর সফলতাও মিলেছে। এ পরীক্ষার ফলে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত মশার জন্মনিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হয়েছে।
গবেষকেরা বলছেন, প্রতি বছর বিশ্বে ২২ হাজার মানুষ ডেঙ্গুর আক্রমণে মারা যায়; যার মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে। ডেঙ্গু জ্বরের উপসর্গ হচ্ছে শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া, মাথা, হাড় ও মাংসপেশির ব্যথা করতে শুরু করা। এ রোগের উপসর্গ এত জোরালোভাবে দেখা দেয় যে একে ‘ব্রেকবোন ডিজিজ’ বলা হয়। এই রোগের ফলে মৃত্যুও ঘটতে পারে।
ডেঙ্গুর কোনো টিকা এখন পর্যন্ত আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। এ ছাড়া এ রোগের উন্নত কোনো চিকিৎসাও নেই। গবেষকেরা আশা করছেন, মশা দিয়ে মশা মারার এই উদ্যোগ যদি আরও সফল হয় তবে বিশ্বের অন্য জায়গায় এটি ব্যবহার হতে পারে। ডেঙ্গুর পাশাপাশি ম্যালেরিয়া প্রতিরোধেও এই পদ্ধতি কাজে লাগানো যেতে পারে। নারী অ্যানোফিলিস মশার কামড়ে ম্যালেরিয়া রোগ হয় এবং প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষ এতে প্রাণ হারায়।
এখানে কি লেখা হবে?
প্রধান উপদেষ্টা: ব্যারিস্টার রফিকুল ইসলাম, আইন উপদেষ্টা: এ্যাড: একেএম ফজলুল করিম, সম্পাদক: অধ্যাপক জিল্লুর রহমান বিজয়, নির্বাহী সম্পাদক: আব্দুর রউফ তালুকদার, সহকারী সম্পাদক: অসীম কুমার সরকার, বার্তা সম্পাদক: হুমায়ূন কবির
প্রধান কার্যালয়: কালিয়াকৈর, গাজীপুর। শাখা অফিস: কটাপুর, বগুড়া। 01710 782253
Copyright©dainikbangladeshsomoy.com All rights reserved